
প্রকৃতিতে যখন শরৎ কাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় তার আগমনী বার্তা। ঠিক তেমনই সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটন কেন্দ্রের পিয়াইন নদী ঘেঁষে সংগ্রামপুঞ্জির মায়াবী ঝর্ণার খাসিয়া পুঞ্জির নিচে সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো কয়েক একর জায়গা জুড়ে সাদা কাশফুল মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের মাঝে। এমনিতে গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত সব কয়টি পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে জাফলং এর সৌন্দর্য অতুলনীয়, যার জন্য বিশেষজ্ঞরা জাফলং পর্যটন কেন্দ্রকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করেছেন।

জাফলং ইসিএভুক্ত এলাকায় কয়েক বছর থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় জাফলংয়ের পিয়াইনের বুকে চর জেগেছে। সুবিশাল চরজুড়ে প্রাকৃতিকভাবে ফুটে উঠেছে কাঁশফুল। ঘুরতে আশাদের জন্য বোনাস হিসেবে বিনোদন দিচ্ছে কাঁশফুলে বিছানো বাগান। সৌন্দর্য পিপাসুরা নতুন করে এই কাঁশফুলের সঙ্গে মনের মাধুরী মিশিয়ে নিজের মতো করে আনন্দ উপভোগ করছেন। প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো সাদা কাশফুল জাফলং এর সৌন্দর্য আরো বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং পর্যটক পিয়াসীদের কাছে টানছে। কথায় আছে প্রকৃতি কখনো ঠকায় না একদিকে ক্ষতি করলেও অন্যদিকে পুষিয়ে দেয়। সংগ্রামপুঞ্জি মায়াবী ঝর্ণায় এখন পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সাদা কাশফুল। মায়াবী ঝর্ণায় খুব বেশি পানি না থাকলেও আগত পর্যটকদের সেই অভাবটা পূরণ করছে নীল আকাশের নীচে রোদ আর মেঘের মিতালীতে, আদ্র বাতাসের গলাগলিতে দাঁড়িয়ে থাকা এই কাশফুল। একটু দূর হতে দেখলে মনে হবে বরফ জমেছে, নতুবা মনে হবে সাদা বক পাখিদের অভয়ারণ্য।
চমৎকার মেঘের ঋতু শরতের আকাশ থাকে নীল আর ঝকঝকে পরিস্কার। ওই আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। সবুজ প্রকৃতিতে বাতাসের সঙ্গে খেলা করে সাদা কাশফুল দর্শনার্থীদের রশদ যোগাচ্ছে। সবুজ আর সাদা দু’টিই শান্তির প্রতিক। আর এই দুইটি ঘিরেই কাশফুল। তাই খুব সহজেই এটি মানুষের মনকে সাজিয়ে তোলে। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে উঠছে দর্শনার্থীরা। কাশফুলকে ঘিরে দর্শনার্থীদের পদচারণা ঘটে। স্মৃতি হিসেবে সবাই ক্যামেরায় ধারণ করে কাশফুলের ছবি। নিজেদের ছবি তোলাও বাদ যায় না। বন্ধুমহল, স্বামী-স্ত্রীসহ অনেককেই কাশফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা গেছে। আবার তরুণীরা গাছ থেকে ছিঁড়ে কাশের গোছা সঙ্গে করেও নিয়ে যায়।

কুমিল্লা থেকে আগত পর্যটক সাঈদ ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মায়বী ঝর্ণা দেখতে গিয়ে পাশেই কাঁশফুলের বিশাল এলাকা দেখে মুগ্ধ হন তারা।
এখানে কাঁশফুল রয়েছে জানা ছিল না ঢাকা থেকে আগত আল আমিনের হঠাৎ করে বিশাল এলাকায় কাঁশফুল দেখে লোভ সামলাতে না পেরে সেখানে যান তিনি। এতে তাদের পরিবারে আনন্দ আরও বাড়ে।
মায়াবি ঝর্ণার সন্নিকটে পিয়াইনের বুক চিরে জেগে ওঠা কাঁশফুল সিলেটের পর্যটনকে নতুনত্ব দেবে। তাই স্থানটিকে পর্যটন প্রেমীদের কাছে তুলে ধরার ও সংরক্ষণ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান জাফলংয়ের পর্যটন শংশ্লিষ্ট ও আগত পর্যটকরা।

জাফলং ট্যুরিষ্ট পুলিশের ইউনিট ইনচার্জ রতন শেখ জানান, কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে কাশবন। এখন গ্রাম-বাংলায় বিচ্ছিন্নভাবে থাকা যে কয়টি কাশবন চোখে পড়ে সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এখানে প্রতিবছরই প্রাকৃতিক ভাবে কাশবন জন্মায়। জাফলং আসা পর্যটকর ও দর্শনার্থীরা মায়াবী ঝর্ণা, জাফলং পর্যটন কেন্দ্র এবং এই কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে। তিনি আরো জানান, জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার দায়িত্বে থাকা ট্যুরিষ্ট পুলিশ সদা তৎপর।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তাহমিলুর রহমান বলেন, কয়েক বছর থেকেই জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মায়াবী ঝর্ণার পাশে পিয়াইন নদীর বিশাল চরজুড়ে কাঁশফুল ফুটেছে। এ জায়গাটি পর্যটকদের জন্য উপভোগের নিরাপদ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।