
সিলেটের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (১৪ জুন) সকাল সারে ১১ টার দিকে সাংবাদিকদের সাথে কথা শেষে জাফলংয়ের পিকনিক স্পট থেকে ফেরার পথে স্থানীয় শ্রমিক-ব্যবসায়ীরা পাথর কুয়ারি চালুর দাবিতে উপদেষ্টাদের রাস্তা আটকে গাড়ি বহরের সামনে দাঁড়িয়ে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকলে বাধাগ্রস্ত হয় উপদেষ্টাদের গাড়ির বহর। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরো বিরূপ অবস্থা দেখা দেয়।
জাফলং পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে এইরকম জায়গায় আমরা আর পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিবো না। এই জায়গা (জাফলং) প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, আমরা কথা বলেছি পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে, এইখানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে পর্যটন বিকাশের মাধ্যমে যারা পাথর উত্তোলন করেন তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করার জন্য আমরা কাজ করছি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে এই এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। আপাতত এই এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। দ্বিতীয়ত এখানে যে ক্রাশার মেশিন আছে সেগুলো সরিয়ে নিতে হবে, এজন্যে সকল ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হবে। সিলেটের যে পর্যটনকেন্দ্র গুলো এইগুলা আধুনিকায়ন করলে সিলেটে যে লন্ডন থেকে টাকা আসে তার থেকেও বেশি টাকা এইখাত থেকে আসবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, এখন আমাদের বুঝতে হবে আমরা কোনদিকে যাবো? পাথর উত্তোলন করে পরিবেশ ধ্বংসের দিকে যাবো নাকি এটা পরিবেশগত সৃষ্টি করে বিনোদনকেন্দ্র স্থাপন করে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে শীঘ্রই সিলেটের সকল পর্যটন সামগ্রীক উন্নয়ন নিয়ে একটি পরিকল্পনা করবো।
শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দুই উপদেষ্টা জাফলং পরিদর্শন শেষে দেওয়া বক্তব্য শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কাছে সন্তোষজনক না হওয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এসময় শ্রমিকরা ভূয়া ভূয়া স্লোগান দিয়ে গাড়ি বহরের সামনে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। এ সময় প্রায় ১৫-২০ মিনিট গাড়িবহর আটকে রাখেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, আকস্মিকভাবে স্থানীয়রা উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশ দ্রুত তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে রাস্তা ক্লিয়ার করে।