
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আমিন ‘জুলাই আহতদের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এই ঘটনায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তার নাম তালিকা থেকে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

মেঃ আশরাফুল আমিন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের মোঃ আব্দুস সুবহানের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমন করতে সারা দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে মিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তার বিরুদ্ধে ওই আন্দোলনে সরাসরি হামলায় অংশ নেওয়া এবং সহিংসতার নেতৃত্ব দেওয়ার এমন অভিযোগ এনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলাকারী হয়েও কীভাবে তাকে ‘আহত’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো, তা তদন্ত করা উচিত।
গত শুক্রবার (১৬ ই মে) উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ‘জুলাই আহতদের’ গেজেটের মধ্যে তার নাম দেখে (গেজেট নম্বর ১৮৭) (মেডিকেল কেস আইডি ২৩৪৭২) শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তাদের দাবি, যারা প্রকৃতপক্ষে আহত হয়েছেন, তাদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষের হামলাকারীকে কিভাবে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক অভিযুক্ত মোঃ আশরাফুল আমিন বলেন, আমি ২০১৭ সালে একটি মামলায় পড়ার পর দলীয়ভাবে কোন সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে তখন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পর্ক শেষ করি, এরপর থেকে রাজনীতিতে আমি একেবারে নিষ্ক্রিয় হই এবং দীর্ঘ চার বছর ভারত এবং দুবাইয়ে প্রবাস জীবন কাটাই। ২০২৪ এ সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আমি এ আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করি।
এ বিষয়ে গোয়ইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী জানিয়েছেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে এবং তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি জানান, তালিকা প্রস্তুতির সময় ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হয়েছে। তবে ভুল চিহ্নিত হলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেট জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন বলেন, তালিকা তৈরির প্রতিটি ধাপে আমরা স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি এবং প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রকৃত আহতদের অন্তর্ভুক্তি ও বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার ত্রুটি সংশোধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান আছে।